শীতার্ত পোস্টার—প্লাকার্ড


শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে প্রতিদিন

ছুটে চলে শহরের কিছু সৌখিন মানুষ।

চন্দ্রিমা শীতার্ত পোস্টার—প্লাকার্ড

উদ্যান, রমনা পার্ক, ধানমন্ডির লেক মুখরিত হয়

তাদের পায়ের শব্দে।

ঘুমকাতর শীতার্ত সচকিত মানুষ অলস চোখে তাকিয়ে দেখে—

শহুরে সৌখিন মানুষের শরীর থেকে অবিরত সুখ

গলে—গলে পড়ে বিশ্রীভাবে!

 

শহরে শীত পড়েছে এবার খুব;

কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে রিকশা টানে জমির শেখ, কালু মুন্সি।

ঝাড়ুদার রামু তাড়ি খেয়ে বউয়ের গালে চুমু খায়,

হেসে বলে—‘আরে—ও রাধা, কই গেলি হামাক একলা ফেলে!’

সে কথার উত্তর দেয় না রাধা—চন্দ্রাবতী,

আড়চোখে তাকায়—মুখ টিপে হাসে অলক্ষে!

 

ষাটোর্ধ্ব ননী গোপাল একা—কেউ নেই তার।

বিরান বাড়িতে সময় কাটে আলস্যে;

একাত্তরের উত্তাল দিনে ডান পায়ে বুলেটবিদ্ধ ননীর দুই চোখে

এখন চৈত্রের খরা!

 

শীতার্ত অবনী বাউল একটি কম্বলের জন্য

ঈশ্বরকে ডেকেছে বার—বার, সাড়া মেলেনি তাঁরও!

এবার হিম শীতে আরো শীতার্ত রামু, অবনী বাউল

ননী গোপালরা এখন মৃতপ্রায়—

তাদের ঠিকানা এখন ফুটপাত!

 

এবার শীতেও মানববন্ধন হয়েছে, পোস্টার—প্লাকার্ডে

রঙিন হয়েছে মানুষের আদিখ্যেতা!

পোস্টারে—প্লাকার্ডে অভাবী মানুষের কথা লেখা আছে

লেখা নেই দিনলিপির জটিল কড়চা।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url