একটি লতানো গাছ
ব্যালকনিতে একটি লতানো গাছ উঁকি দিয়ে আকাশ দেখে রোজ।
সূর্য আর অগুনতি নক্ষত্রপুঞ্জের আলো এসে চোখে পড়ে ওর,
নীল রঙ ছুঁয়ে দেয়ার তীব্র আকাক্সক্ষায় হাত বাড়ায় শূন্যে, তার
ইচ্ছের ঢেউ আটকে যায় লোহার গরাদে।
মাঝে মধ্যে একঘটি জল ঢেলে দিয়ে বলি—এই নাও সঞ্জীবনী,
বেঁচে থাক; আগামী বসন্তে অন্তত একটি ফুল দিতে হবে আমাকে।
তোর কথা বলেছি যাকে, সেই নন্দিতাকেই যে প্রথম ফুলটা
দিতে হয়! তার যে অপেক্ষা ফুরায় না কিছুতে।
লতানো গাছ আরও নুয়ে পড়ে,
আরও বেশি নতজানু হয়ে বলে দেবো তো, যদি বেঁচে যাই!
আলোহীন, বায়ুহীন এই গুমোট অন্ধকারে যদি
আরও একটি বছর আয়ু পাই।
বসন্তের দেখা নাই, গ্রীষ্মের দাবদাহে পোড়ে হৃদয়,
পরিযায়ী মন উড়ে-উড়ে যায়, পথ হারায় মেঘের কুন্তলে
পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরু,
কোথাও কেউ নেই, চাতকের পিয়াস বাড়ে...
তারপর ধীরে-ধীরে লতানো গাছটি আরও বেশি শীর্ণ হয়,
জীর্ণ হয়, দুই চোখে তীব্র হতাশার ছাই উড়ে উড়ে পড়ে
আমার বুকে, মুখে, হৃদয়ের উদ্যানে;
আমি কুণ্ঠিত হই, লজ্জিত হই, ফিরে যাই আপন ধ্যানে!
মোহাম্মদপুর, ঢাকা