সেই তুমি, আছ আগের মতন!


গতকালই তো তোমাকে দেখেছিলাম আমি, কত যুগ পরে

রোকেয়া হল থেকে বের হয়েছ তুমি, হেঁটে যাচ্ছ ধীরে-ধীরে

কলাভবনের দিকে।

তোমার পরনে লালপাড় বাসন্তী শাড়ি, হাতে কাঁচের চুড়ি,

চোখে কাজল ছিল না আগের মতো, তবে ঠোঁটে লালরং লিপস্টিকে

তোমাকে তরুণী-তরুণীই মনে হচ্ছিল।


আচ্ছা চুলগুলো এতো অযন্তে রেখেছ কেন? মাথায় একটা

হিজাব পরলে খারাপ লাগত না এতটুকু।

(যদিও হিজাব আমার পছন্দ নয়, তবে কিছু-কিছু কৌশল তো আর

অস্বীকার করে না কেউ, আমারও সে দুঃসাহস কোথায়!)

সাদা রঙ চুলগুলো অমন অলক্ষ্মীভাবে তোমাকে ম্লান করছে দেখে

আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল। আহা, সময়টা যে কী, কী দ্রুত চলে যায়

জীবন থেকে! 


জীবন মানেই কি অনিবার্য পতন, ধীরে-ধীরে ক্ষয়ে যাওয়া, নিঃশেষ

হয়ে যাওয়া ধূপের মতন? জীবন মানেই কি আক্ষেপ, কষ্টের দাবদাহে

পুড়ে-পুড়ে ছাই হওয়া? 


ইচ্ছে হচ্ছিল তোমার সামনে গিয়ে দাঁড়াই, ঠিক আগের মতন।

কেন জানি সাহসে কুলায়নি। কী জানি চিনতে না-পারো যদি, যদি

কোনো কৈফিয়ত চেয়ে বসো ফের, যদি অবহেলা করো এতটুকু!


সেইসব পুরনো অপরাধ বোধ আমাকে কুরে-কুরে খায়, এখনও

আমি শামুকের মতন গুটিয়ে যাই নিজের ভেতর; আমার ভেতর

বলতে শুধুই শূন্যতার মরুভূমি, আমার ভেতর বলতে অনাবাদী জমি।

তবে সেখানে এখনও দুষ্পাপ্য ফসলের পরিচর্যা করি আমি,

সে তুমি, আজো আছো আগের মতন!


বাসস, ঢাকা 
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
কাব্যগ্রন্থ : ভালো থেকো নন্দিতা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url