এই বসন্ত শুধুই তোমার
শেষ হয়নি এখনও বসন্তের মাতাল বাতাস। পড়ন্ত বিকেলে
দূর দিগন্ত থেকে ছুটে আসা পথহারা বিরহী পাখির ঝাঁক
আমারই মতো গন্তব্যহীন উড়ে-উড়ে যায়; যেতে-যেতে
থমকে দাঁড়ায়, অতঃপর দীর্ঘশ্বাস বুকে নিয়ে শূন্যে মিলায়!
এই বসন্তেই আদিম শূন্যতা অক্টোপাসের মতো ঘিরে ধরে,
সবটুকু রক্ত নিঃশেষে ফেলে রেখে যায় সমুদ্র তটে একাকী।
বেলাভূমিতে শামুকের মতো হেঁটে-হেঁটে ক্লান্ত-বিবশ আজ
ঠিকানাহীন এক যাযাবর আমি প্রাণপণে তোমাকে ডাকি।
চুলে তোমার বসন্ত বাতাসের উৎসব; জরিন শাড়ির আঁচল
কী উচ্ছ্বাসে-আবেগে-আনন্দে মাতে; মহুয়ায় মাতাল আনন্দ
তোমার দুই চোখে ঝরে পরে বার-বার, মুগ্ধ ডানায় ভর করে
তুমি শূন্যে পাখা মেলো, এবার এই বসন্ত শুধুই তোমার।
ফুল তোমার জন্যই ফোটে, তোমার ঠোঁটের রঙে রক্তিম হয়
শিমুল, পলাশ, মান্দার আর নাম না-জানা বুনো ফুলেরা যতো;
উচ্ছ্বল আনন্দে মোহন মায়াবী বাতাসে পথের ধূলো কতো
খুব সৌভাগ্যবান বলেই ওরা সবাই তোমার আঁচলে জড়ায়।
উপরে নীল আকাশ, দিগন্তে পাহাড় মেঘের স্পর্শ খোঁজে,
আমি খুঁজি তোমাকে; পথহারা সফেদ ক্লান্ত বকপাখি
একলা উড়ে যায়—তুমি শুধু ঝর্ণার জল হয়ে ছুটে চলো,
আর আমি একাকী নিঃস্ব এই বসন্তে ভাঙনের আর্তনাদ শুনি।
ঢাকা
কাব্যগ্রন্থ : এই বসন্তে তুমি ভালো থেকো