শাহবাগের লাল সিগন্যাল

 


আজও আমার কিছুটা দেরি হবে, অনিচ্ছায়।

পথে পথে ট্রাফিক জ্যাম—আরও কত কত কৈফিয়ত,

সে সব তোমার গ্রহণযোগ্য নয়, তবুও বার-বার

ঘুরেফিরে একই কথা বলতে বাধ্য হই।

প্রতীক্ষার প্রহরগুলো দেরির কারণেই মোহনীয় হয়,

মহান হয় প্রতীক্ষারত অস্থির দুই চোখ।


গাড়ির চাকায় বাতাস থাকে না মাঝে-মধ্যে,

এ এক বিরক্তিকর যন্ত্রণা।

বেহিসেবি পেরেক ঢুকে পাংচার করে ইচ্ছেগুলো,

এ আর নতুন কিছু নয়।

বেরসিক পুলিশও কম যায় না! কাগজপত্রের ছলে চোখ রাঙায়,

হলুদ বাতি জ্বেলে রেখে পোড়ায় শুধু।


আরও কতো কারণ দেরি হওয়ার—

ফর্দ দেখে বাজারের সেরা জিনিসগুলোই তো চাই!

এদিক-ওদিক হলে তো আরেক ঝক্কি!

অথচ দোকান থেকে দোকান, বাজার থেকে বাজার

ঘুরতে-ঘুরতে আমার বেলা যায় কেটে, মনের মতো

জিনিসগুলো খুঁজে পেতে হন্যে হয়ে ঘুরি আমি!

সে কথা মানতে চাও না তুমি!


মাঝে-মাঝে দু-একজন বন্ধু, স্বজনের সঙ্গেও দেখা হয়,

তখন চা-সিগারেটের একটা ব্যাপার তো থাকেই।

এ-কথা ও-কথায় কখন যে বেলা গড়িয়ে যায়, টের পাই না।

আমার ভেতর অস্থিরতা হয়তো টের পায় ওরা,

আমাকে কী বলে জানো? সেসব কথা না হয় থাক এখন।


আমি এখন শাহবাগের লাল সিগনালে আটকে আছি!

জ্যামের মধ্যে বাদাম বিক্রেতা আর আইক্রিমওয়ালার চিৎকার

নাগরিক জীবন আরও বেশি শংকিত করে তোলে, বিরক্তি ধরে।

তবুও জীবন কত সুন্দর, কত সুন্দর বিড়ম্বিত আকুতি!


১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
বাসস, ঢাকা
কাব্যগ্রন্থ : ভালো থেকো নন্দিতা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url