যাযাবর ভাবনা


ইচ্ছেগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেলে

তুমি গোলাপের চারা রুয়ে দেবে শিথানে!

আমি বুঝি গোলাপ হয়ে ফুটব তখন?

এ জীবনে কোন ফুল হয়ে ফোটেনি, কোন সুঘ্রাণ

ছড়ায়নি যার দীঘল কালো চুল,

শরীর থেকে ভুরভুর করে বাতাসে মেশেনি যার

আতরের ঘ্রাণ,

মন খারাপ করা কোনো সকাল অথবা সন্ধ্যায়

তুমি যদি ভাবো কখনও তাকে—

আমি কি সাত আসমান থেকে তোমাকে

স্পর্শ করতে পারবো তখন?


যে দুই হাত আজ স্পর্শের স্বপ্নে সাহারার

তৃষ্ণা নিয়ে কেঁপে-কেঁপে ওঠে,

বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিতে ইচ্ছে হবে যখন বালুমাটি

তখন তাকে কোথায় পাবে তুমি?


গোলাপের কোরকে, সুঘ্রাণে স্মৃতির উঠানে

মন খারাপ করা দীর্ঘশ^াসে ভরে যাবে যখন আঙিনা তোমার;

তখন দূরে কোথাও ডেকে যাবে পথহারা কোন বিবাগী বাউল 

সেই ক্ষণে হয়তো তোমার পড়বে মনে

আমি নেই—আমি নেই কোথাও আর।


ভাবতে-ভাবতে তোমার

এক জীবন মাটি হবে; তুমি বিনাশ হবে।

আজ তোমার সতেজ অনুভূতির বাগানে

এক চিলতে স্থান হলো না যার! আমি-হারা

অনাগত দিনে তাকেই ভাবতে-ভাবতে

যাযাবর দুঃখগুলো পোড়াবে তোমায় যখন,

গোধূলি সন্ধ্যায় গোলাপের সুঘ্রাণে সেই ক্ষত

শুকাবে কি কখনো—ভেবে দেখো!


১২ আগস্ট, ২০১৯/মোহাম্মদপুর, ঢাকা

দুঃখ ভালোবাসা বিবর্ণ বাসর


সবাই একে একে চলে গেলে

স্মৃতির পানপাত্রে যে দীর্ঘশ্বাস জমে থাকে

তাকে যদি ভালোবাসা বলি--

প্রেম বলে বিশেষিত করি তাতে কার কী আসে যায়!


কখনো স্মৃতিগুলো ন্যাপথলিনের ঘ্রাণ

কখনো বাঁশি ফুলের স্তূপ-যন্ত্রণা

আবার কখনোবা পানপাত্রে তলানির সুখ

ভালোবাসার এমন আয়োজন সবার জন্য নয়—

যাদের হয় উপেক্ষিত মহাজান তারা

ভালোবাসার কড়িকাঠে নির্ভীক-নির্ভয়!


এমন প্রেমিক মহাজন পই-পই খুঁজে পেলে

তাকে এক ঘটি জল দিও, পদ্মা, মেঘনা বা ধলেশ্বরীর

জলের সঙ্গে চোখ দিয়ো, গ্রীবা দিয়ো, ঠোঁট দিয়ো

দিয়ো কস্তুরি ঘ্রাণ বুকের গভীর থেকে!


দুই হাত প্রসারিত করে বুকের মধ্যে টেনে নিতে পারো যদি

তুমিও পাবে মন্থন শেষে সমুদ্রের সুধা

একা দু:খ হয়-- প্রেম-ভালোবাসা বিবর্ণ বাসর!


বাসস, পুরানা পল্টন, ঢাকা
১৩ আগস্ট, ২০১৯
কাব্যগ্রন্থ : ভালো থেকো নন্দিতা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url