তুমি যখন জানতে চাও


 তুমি যখন জানতে চাও কেমন আছি আমি,

এক আকাশ রোদ্দুর তখন খেলা করে নিউরনে;

মনে হয় আমারই আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে রয়েছ তুমি,

অপরাজিতা-নীল শাড়ির ভাঁজে-ভাঁজে ঝলমলে জোছনা

ছুঁয়ে যায় তোমায়, আর বাতাসে বেসামাল চুলে

তোমাকে উর্বশীর মতো মনে হয় আমার।

তুমি যেন আদিগন্ত পাহাড় আড়াল করে

আমারই প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকো ভেনাসের নগ্নতা নিয়ে!


তখন আমি স্পর্শ করি তোমার কৃষ্ণচূড়া ঠোঁট,

তুলতুলে মসৃণ টোলপড়া গাল।

চিবুকের লাল তিলটা আরও লাল হয়ে ওঠে আমার স্পর্শে!

নাকফুলের নীল পাথরটা অদ্ভুত চোখে তাকায়

আমারই দিকে যখন—

তখন রাজহংসের মতো গ্রীবা উঁচু করা মহারাজা আমি

রাজ্যপাট জয়ের আনন্দ ভুলে

তোমাকে আরো বেশি করে পাওয়ার আনন্দে

ভেসে যাই—ভেসে যাই লোকালয় ছেড়ে গহিন অন্ধকারে।


সেখানে গাঢ় অন্ধকারে নিমজ্জিত ঈর্ষাকাতর আমি

হাঁসফাঁস করি তোমার দীর্ঘ বন্ধু-তালিকা দেখে!

আমি অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ি—

অসহ্য যন্ত্রণায় কেঁদে উঠি বার বার,

নিজের হাতে নিজের কণ্ঠ রোধ করে

মৃত্যু-যন্ত্রণায় ছটফট করা আমি তোমার জানতে চাওয়ার উত্তর

খুঁজতে খুঁজতে-খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্তিতে মুষড়ে পড়ি...।


কেমন আছি?

কী আর জানাব তোমাকে আমি!

তুমি ছাড়া আমি নির্জন দ্বীপ, মৃত জোনাক, গ্রহান্তরে নির্বাসিত

যাযাবর পথিক এক!


বাসস, পুরানা পল্টন
২৫ অক্টোবর, ২০১৯
কাব্যগ্রন্থ : ভালো থেকো নন্দিতা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url