আফসোস


খুব মনে পড়ে—

বাড়ির সামনে বিশাল দিঘিতে শাপলা ফুটতো রোজ।

দিঘির সেই কাকচক্ষু জলে ছায়া পড়ত

তোমার হলুদ শাড়ির।

শানবাঁধানো ঘাটে দুই পা ডুবিয়ে জলে খুব কৌতূহলী চোখে

তাকাতে এদিক-সেদিক;

হঠাৎ তোমার চোখে চোখ পড়তেই

একমুঠো জল তুলে ছুঁড়ে দিতে শূন্যে! 

কে জানে কী ভাবতে তখন তুমি! 

অথবা কোনো কোনো দিন এমনও গেছে

তোমাকে দেখব বলে সারাটা বিকেল

অস্থির দীর্ঘশ্বাস ছুঁড়ে দিতাম

বাতাসের পালে।

সেই উদাসী বাতাস তোমাকে কখনও ছুঁয়ে যেতো কি না

কেউ তা জানে না; তুমিও জানাওনি কোনোকালে।

কখন যে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসত,

কখন যে মায়াবী জ্যোছনায় ঢেকে যেত চরাচর,

টেরই পেতাম না কখনও!

এখনও মনে পড়ে—

খুব ভোরে সূর্য ওঠারও আগে তোমার ভৈরবী

আমার ঘুম কেড়ে নিত রোজ,

তড়িঘড়ি উঠে চুপি-চুপি তোমার চৌকাঠে গিয়ে

দাঁড়াতাম আমি।

তুমি জন্মান্ধ—সেসব দেখতে পাওনি কোনোকালে!


১২ অক্টোবর, ২০১৬
মোহাম্মদপুর, ঢাকা
কাব্যগ্রন্থ : ভালো থেকো নন্দিতা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url