ফিরে এসো নীলাঞ্জনা [৭]

 


।। সাত ।।

আজ কোনো অ্যাসাইমেন্ট না থাকায় সেন্ট্রাল ডেস্কে বসে গল্প করছিল অমিত। হঠাৎ পিয়ন মাহবুব এসে বলল, ‘স্যার, একজন ম্যাম রিসিপসন রুমে আপনার জন্য ওয়েট করছেন। আমি তাকে বসতে বলে এসেছি।’

ওকে। আমি যাচ্ছি। 

 গেস্ট এলেই চা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এটা মিডিয়ার বহু রীতি। চায়ের জন্য মাহবুবকে টাকা দিতে চাইলে মাহবুব বললÑ

‘নো নিড টাকা স্যার। এটা তো অফিস বিয়ার করবে।’ মাহবুব বলল।

অমিত মাহবুবের ইংরেজি-বাংলা শুনতে-শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আর কেউ ওমন করে বললে খারাপ লাগতেই পারে, তবে মাহবুবের ক্ষেত্রে খারাপ লাগে না। কারো কারো মুখে খুব খারাপ বাক্যও রসাত্মক মনে হয়। মাহবুব পিয়ন হলেও সমঝদার মানুষ। কাকে কতটুকু সম্মান করতে হবে, সমীহ করতে হবে, সেটা মাহবুব জানে।

রিসিপসনের সোফার এক কোণে যে ভদ্রমহিলা বসে আছে, তাকে দেখে অমিত একেবারেই চিনতে পারেনি। রাতেও সে হালকা সানগ্লাস পরে আছে। খুব দামি শাড়ি পরে আছে মহিলা। অলংকার বলতে কিছু নেই। তারপরও তাকে অনিন্দ্যসুন্দর মনে হলো অমিতের। অমিতের পায়ের শব্দ পেয়ে মাথা উঁচু করে ভদ্রমহিলা বলল--

‘তুমি কি সত্যি আমাকে চিনতে পারছ না অমিত?’

‘না।’

‘তুমি কি স্মৃতিশক্তি হারিয়েছ?’

‘না তো! সবই তো আমার মনে আছে!’

অমিত দৃঢ়তার সঙ্গে বলল।

সানগ্লাস খুলতে-খুলতে মহিলা বলল, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা কি একেবারেই মনে রাখনি? আমি ঝিনুক। চিনতে পারলে না কেন?’

অমিত ঝিনুকের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।

‘আমি তো জানি শত্রুকে মানুষ ভুলতে পারে না। যদিও বন্ধুকে খুব একটা মনে রাখার প্রয়োজন মনে করে না কেউ, যখন প্রয়োজনটুকু ফুরিয়ে যায়।’ ঝিনুক বলল।

‘তুমি আমার শত্রু হতে যাবে কেন? কোনো শত্রুতা তো নেই তোমার সঙ্গে আমার! কেমন আছ তুমি?’

‘আমি যেমন থাকার তেমনি আছি। তুমি ভালো আছ নিশ্চয়ই। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ ছয়টি মাস তুমি আমার সঙ্গে একটি কথাও বলনি কেন? কী ক্ষতি করেছিলাম আমি! ফোনের পর ফোন করেছি। তুমি সময় দিতে চাওনি। কিন্তু কেন? সেটাই জানতে এসেছি আজ।’

‘এসব কথা কি এখানে আলোচনা করা যায়? এটা তো অফিস।’

‘সেটা আমিও জানি। তোমাকে তো বলেছিলাম একদিন তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই। তুমি কি সময় দিয়েছ?’

‘না।’

‘কেন দাওনি? বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুত্বের ওপর আর কোনো বন্ধুত্ব আছে না কি? তুমি আমাকে মনে রাখনি!’ 

 ‘তুমি যা আমার কাছ থেকে আসা করে বাসায় যেতে বলেছিলে, সেটা আমি চাইনি বলে তোমাকে এড়িয়ে গেছি।’

‘ওসব পুরোনো কথা, এসব আজ এখানে নয়। তখন তো বয়স কম ছিল। জীবন ছিল খর¯্রােতা নদীর মতো। আজ অনেকটা বয়স বেড়েছে। কিছুটা তো থিতু হয়েছি। তবুও বলি, শারীরিক বিষয়টি কি একেবারেই অস্বীকার করা যায়? তুমি কি পারো? এটাকে দোষের ধরার কী আছে?’

অমিত কোনো উত্তর দিচ্ছে না দেখে ঝিনুক আবারও বলে, ‘তুমি আমাকে সময় দেবে? অনেক কথা বলার আছে তোমাকে। তোমার কাজ শেষ হবে কখন? আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।’

‘আজ আমার ডে-অফ, অর্থাৎ সাপ্তাহিক ছুটি। শুধু আড্ডা দেওয়ার জন্যই আসা।’

‘তাহলে চলো।’

‘কোথায়?’

‘ভয় নেই। তোমাকে গুম করার জন্য আসিনি। তাতে তো আমারই ক্ষতি।’


অফিসের গেটে পৌঁছাতেই অমিত দেখতে পেল একটি দামি গাড়ি ঝিনুকের জন্য অপেক্ষা করছে। কাছে যেতেই ড্রাইভার দরজা খুলে দিলো। ঝিনুক বলল, ‘ওঠো অমিত।’

‘কিন্তু...।’

‘কোনো কিন্তু নয়। আজ তোমাকে কোনো অনুরোধ করব না, জোর করব। তোমার ওপর জোর করার অধিকার আমার আছে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ছয় বছর এবং তারপর আরো দশ বছর তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছি। আজ তার হিসাব চুকাতে হবে!’ আড়চোখে তাকিয়ে ঝিনুক মৃদু হাসে।

‘কী বলছ এসব?’

‘কী বলছি, সেটা পরে। আগে গাড়িতে ওঠো।’

অমিত মন্ত্রমুগ্ধের মতো গাড়িতে উঠে বসে। 

গাড়িতে উঠে ঝিনুক জিজ্ঞেস করে, ‘বিয়ে করেছ?’

‘না।’

‘কেন?’ তোমার কিশোরী প্রেমিকার জন্য? সে কি আজও তোমার পথ চেয়ে আছে?’

‘না। ওর বিয়ে হয়ে গেছে!’

‘তোমাকে ঠকিয়েছে?’

প্রতিবাদ করে অমিত। ‘না ঠকায়নি। ও তো জানতোই না ওকে ভালোবাসি।’

‘তুমি বোকা অমিত। একই সঙ্গে একই মহল্লায় বড়ো হয়েছ। একসাথে সংগঠন করেছ, গান গেয়েছ একই স্টেজে। আর তুমি বলছ সে জানত না! তুমি হয়তো ওকে কিছু বলোনি। কিন্তু তোমার চোখ, তোমার অভিব্যক্তি কি একবারও প্রকাশিত হয়নি যে তুমি তাকে ভালোবাসো? যদি না হয় তাহলে তুমি ভালোবাসতে জানোই না! মেয়েরা একবার পুরুষের চোখের দিকে তাকালে মনে খবর পেয়ে যায়।’

‘জানতো না, সে তো বলিনি। তবে আমি তো মুখ ফুটে কিছু বলিনি ভয় ও লজ্জায়। ও তো মেয়ে। আমারই তো বলা উচিত ছিল।’

‘উচিত ছিল তো বলনি কেন? কেন তুমি এতটা ভীতু? কেন নিজের অধিকারটা বুঝে নিতে পারলে না?’

গাড়ি চলতে চলতে গুলশানের একটি বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে। ঝিনুক গাড়ি থেকে নামতেই দু-তিনজন সিকিউরিটি গার্ড স্যালুট দিয়ে পাশে দাঁড়ায়।

‘গেট ভালো করে লাগিয়ে দাও। কেউ এলে আমাকে জিজ্ঞেস না করে গেট খুলবে না।’

ভিতরে ঢুকে সোফায় বসতে-বসতে অমিত জিজ্ঞেস করে, ‘তোমার হাজবেন্ড বাসায় নেই?’

হাসজন্ডে! ওহ নো-নো! প্রচ- হাসিতে ফেটে পড়ে ঝিনুক। তারপর কিছুটা শান্ত হয়ে বলে, ‘আরে বোকা বিয়ে করলে তো হাসবেন্ড থাকবে!’

‘তুমি বিয়ে করনি?’

‘না। যাকে বিয়ে করব বলে বসে আছি, তাকে রাজি করাতে পারিনি।’

‘ওঃ।’

‘তুমি একটু অপেক্ষা করো কাপড়টা চেঞ্জ করে আসছি। তোমার জন্য চা-কফির কথা বলে আসছি। কী খাবে তুমি হট, নাকি অন্যকিছু? অন্যকিছুতে আসক্তি আছে তোমার?’

‘শুধু কফি দিতে পারো। অন্যকিছুতেই আসক্তি নেই। সিগারেট ছাড়া।’

‘আজও সেই তুমিই রয়ে গেলে!’

ঝিনুক ভিতরে চলে গেলে অমিত ভাবতে থাকে, কেন এতটা দিন সে ঝিনুককে এড়িয়ে চলেছে? একজন পুরুষের কাছে কোনো নারী যদি কিছু চায়, সেটা কি অপরাধ? এতদিন যেটাকে অমিত অপরাধ বলে মনে করত আজ সময়ের ব্যবধানে সেটা তার কাছে আর অপরাধ মনে হচ্ছে না। বরং এতদিন ঝিনুককে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নিজেকে অপরাধী ভাবতে লাগল।

একটু পরে ঝিনুক এসে সোফায় বসল। ওর পিছনে-পিছনে এক পরিচারিকা ট্রেতে করে চা-বিস্কুট নিয়ে ঢোকে। ঝিনুক আজ বাসন্তী রং শাড়ি পরেছে। আঁচল অনেকটা মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে। হালকা প্রসাধনীতে ড্রইংরুমের উজ্জ্বল আলোতে ঝিনুককে অপূর্ব লাগছে। দেখলে মনে হয় না যে ঝিনুকের বয়স পঁয়ত্রিশের কাছাকাছি। পরিচারিকা চলে গেলে অমিত বলে, ‘তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে ঝিনুক!’

‘কী!’ অবাক হয় ঝিনুক। ‘সত্যি বলছ তো? ইা কি আমাকে খুশি করছ?’

‘না, তোমাকে খুশি করছি না।’

‘তোমাকে আমার মতো একটি মেয়ে দেখে দেবো, বিয়ে করবে? আমার খালাত বোন। ও সিনেমা করছে।’

‘নায়িকা?’

‘হুঁ।’

‘না’।

‘না কেন?’

‘আমি বিয়েই করব না! অনামিকার জায়গায় কাউকে বসাতে পারব না।’

‘অনামিকা কে?’

‘ওই যে যাকে কিশোরী প্রেমিকা বললে!’

‘কী ভাগ্যবান মেয়েটি! অমন ভাগ্য কজনের হয়? ওকে পেলে আমি খুন করে ফেলতাম।’

‘কেন হিংসে হচ্ছে তোমার?’

‘হবে না! অনামিকা না হলে তোমার ভালোবাসা আমি পেতাম।’

অমিত কিছুটা ভাবে, তারপর বলে ‘তুমি যদি ওকে খুন করো আমার মন কি ওর থেকে সরে আসবে? মানুষ তো স্মৃতি নিয়েও বেঁচে থাকে।’

‘একদিন তোমার সব স্মৃতি ধূসর হবে, মন থেকে মুছে যাবে অনামিকার স্মৃতি। সেদিন পর্যন্ত আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করব। চা খাও। তুমি তো চায়ের পাগল। এই নাও এসট্রে। সিগারেট আছে? না কি দেবো?’

‘তুমি সিগারেট পাবে কই?’

‘কেন তুমি জানো না?’

‘কী?’

‘তোমার মনে নেই ক্লাসে জেরিন, যে পরে ইংরেজি ডিপার্টমেন্টে চলে গেল, ও আর আমি সিগারেট খেতাম। তোমরা ছেলেবন্ধুরা খুব হাসাহাসি করতে। শুধু তাই...’। বলতে বলতে ঝিনুক থেমে যায়।

‘তাই নয় তো, আর কী?’

জেরিন জিনসের সঙ্গে টিশার্ট পরত। তোমরা, মানে তুমি ঠিক নও, মোস্তাক, কামালরা ওকে দেখে ছোঁকছোঁক করত! একদিন কী হলো জানো?’

‘কী?’

অভিসার সিনেমা হলে একটি ইংরেজি ছবি দেখতে যাচ্ছিলাম আমরা চার-পাঁচজন। এর মধ্যে জেরিন ও আমি মেয়ে। বাকি তিনজন হলো আমজাদ, ক্লাসের সবচেয়ে ভদ্র ছেলেটি। ওর সঙ্গে আমি রিকশায় আর জেরিনের সঙ্গে মোশতাক। হঠাৎ দেখলাম রিকশা থামিয়ে জেরিন নেমে পড়েছে। জেরিন আমজাদকে নামিয়ে দিয়ে আমার পাশে উঠে বসল।’

‘তারপর?’

‘জেরিনকে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে? ও বলল, মোশতাক ওর শরীরে যাচ্ছেতাইভাবে হাত দিচ্ছে। কেন তোমার মনে নেই কিছুই?’ বলেই ঝিনুক হেসে উঠল। তারপর আবার বলতে লাগল ঝিনুক, তারপর কী হলো জানো?’

‘কী?’

‘ওদের দুজনের সঙ্গে প্রেম হয়ে গেল! লোকে বলে রাগ নাকি অনুরাগের আয়না...। অথচ তোমার রাগ কখনো অনুরাগ হলো না! তুমি জানো ওরা দুজন বিয়ে করেছে। একটি বাচ্চাও হয়েছে জেরিনের। খুব সুখি ওরা দুজন।’

‘সুখ কি উপর থেকে বোঝা যায়?’

‘যাবে না কেন?’

‘ও আচ্ছা। তুমি কি সুখি?’

‘না।’

‘না কেন? সুখ যদি উপর থেকে দেখে বুঝা যায়, তাহলে তো তোমাকে আমি সুখিই মনে করি। তার মানে তুমি সুখি।’

‘বাদ দাও তো এসব। মেয়েদের সুখ কীসে তুমি জানো?’

‘না। কীসে?’

‘যে মেয়ে জীবনে একবারও পুরুষের লোমশ বুকে মাথা রাখতে পারল না, সে সুখি হয় কী করে!’

‘কী বলছ এসব?’

‘তুমি কি দেবতা? দেবতারাও তো নারীকে কামনা করে। সেক্স ছাড়া অন্তত মেয়েদের জীবন পরিপূর্ণ হয় না অমিত।’

‘সেক্সটাই কি সব?’

‘সুখের সবচেয়ে বড়ো অনুষঙ্গ। না হলে সুখ পূর্ণতা পায় না। এসব বাদ দাও। চা খাও।’

অমিত হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ তুলে নেয়। চা শেষ করে সিগারেট ধরাতে-ধরাতে বলে, ‘এখন যেতে চাই।’

‘আজ তোমাকে যেতে দেবো না।’

ঝিনুক অমিতের পথ আগলে দাঁড়ায়। অমিত লক্ষ্য করে ঝিনুকের বাঁদিকের আঁচল খসে পড়েছে। লাল ব্লাউজে ঢাকা ঝিনুকের বুকের একটি স্তন স্পষ্ট তার সামনে। শিহরিত হয় অমিত। চোখ ফিরিয়ে নেয় সে। ঝিনুক অমিতের দুই কাঁধে হাত রাখে। অমিত ফিরিয়ে দেয়। ঝিনুক হেসে বলে, ‘তুমি একটা গবেট অমিত। তুমি কি পুরুষ! সন্দেহ হয় আমার। আঃ কী আফসোস, একটা জড় পদার্থকে সারা জীবন ধরে ভালো বেসে গেলাম!’

‘কী বলছ তুমি?’

‘কেন?’

‘তুমি একা একটি মেয়ে একা থাকছ। আমি পুরুষ। লোকে কী বলবে?’

ঝিনুক হাসে।

‘ভয় পেয়ো না। এখানে যারা আছে ওরা কিছু বলবে না। তুমি চিন্তা করো না। তুমি আলাদা রুমে দরজা বন্ধ করে ঘুমাবে। একটুও ডিসটার্ব করব না। সে নদী আর নেই, সেই ¯্রােত হারিয়ে গেছে অনেক আগে। শোনো অমিত, আমার কিছু সমস্যা আছে। সেটা তোমার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। ডিনার শেষ করে তোমাকে বলব। তোমার হেল্প দরকার আমার।’

ঝিনুকদের এই বাড়িটি এক বিঘার উপর। ব্যাকইয়ার্ডে চমৎকার একটি ফুলের বাগান। ডিনার শেষ করে অমিত ও ঝিনুক পিছনের লনে গিয়ে বসে।’

‘তুমি কি জানো বাবা-মা দুজনই মারা গেছেন। প্লেন এক্সিডেন্ট করে। আমার কোনো ভাই নেই, আমি একা। আত্মীয়-স্বজন বলতে এক খালা ছিলেন, তিনিও অনেক আগে মারা গেছেন। বাবা মারা যাওয়ার আগে সব সম্পত্তি আমার নামে উইল করে দিয়ে গেছেন।’

‘হঠাৎ উইল করতে গেলেন কেন?’

‘বাবার দুবার স্ট্রোক হয়েছিল। এ জন্য ভয় পাচ্ছিলেন তিনি। একটি লেদার ফ্যাক্টরি আছে, সেটাও আমার নামে। ওখানে দক্ষ ব্যবস্থাপনা আছে। ওগুলো নিয়ে ভাবি না। তবে এ বাড়িটি নিয়ে ভাবছি।’

‘কেন?’

‘আমার এক চাচা আছেন। আমার বাবার সৎভাই, খুব ধুরন্ধর লোক। তিনি এই বাড়িটি দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।’

‘এসব দলিল-দস্তাবেজ কোথায়?’

‘ব্যাংকের লকারে।’

‘তাহলে ভাবছ কেন?’

‘ওরা আমাকে খুন করতে চাইছে। হুমকি দিয়েছে কয়েকবার।’

‘জিডি করেছ?’

‘না। কাল সকালেই জিডি করবে। তোমাদের এখানকার এসপি শফিক সাহেবকে তুমি চেনো?’

‘কোন শফিক সাহেব?’

‘জহিরুল হক হল শাখার জিএস ছিলেন।’

‘শফিক ভাই! বলো কি!’

‘শফিক ভাই হেল্প করবে নিশ্চয়? সে কিন্তু এখনো বিয়ে করেনি মনে হয়। সে ব্যাপারেও হেল্প করতে পারবেন।’

‘মানে?’

‘একজন হ্যান্ডশাম পাত্র জুটিয়ে দিলাম!’

মেয়েরা ইয়ার্কি বোঝে না। ঝিনুকও বুঝতে পারেনি। 

প্যাকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরায় ঝিনুক। উঠে পায়চারি করতে থাকে। আস্তে-আস্তে বলে, তুমি কিন্তু আমাকে অপমান করলে অমিত! আচ্ছা বলো তো আমার কি পুরুষের অভাব হবে যদি বিয়ে করতে চাই?’

‘তা থাকবে কেন? টাকা দিয়ে তো সব পাওয়া যায়।’

অদ্ভুত চোখে তাকায় ঝিনুক। তারপর অমিতের পিঠে প্রচ- কিল মেরে বলে, ‘আমি পাত্র চাই না অমিত। তুমিÑশুধু তোমাকে চাই। অন্তত তোমার বন্ধুত্ব চাই আমি। চিরদিন। বলো থাকবে?’

অমিত মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে বলে, ‘শুধু বন্ধুত্ব, আর কোনো দাবি নেই তো?’

‘না নেই। থাকবে বলো?’

‘থাকব।’


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url