আমাকে ছুঁইয়ো না তুমি
আমাকে তুমি ছুঁইয়ো না কখনও, কোনোদিনই না,
আমার বুকের মধ্যে ঘূর্ণি জলের উদ্দাম নৃত্য
বেশরম খুব—বেহায়া ভীষণ; ‘সভ্যতার’ ঘোরটোপ
না-মানা জানোয়ার রক্তে আগুন ধরায় প্রতিদিন।
তুমি আমাকে ছুঁলে তোমার পেলম মসৃণ হাত
পুড়ে যাবে, সংসার উচ্ছন্নে যাবে, খসে পরবে
শরীর থেকে সভ্যতার নামাবলি—
কেনো বিষাক্ত হবে তুমি! কেনো?
মানুষ জেনে গেছে চাঁদের নিজস্বতা নেই কিছুই,
দূর থেকে যা দেখেছে এতোদিন—মিথ্যে সব
পাথরে, ধূলায় কলঙ্কিত সে চাঁদ
অজানা ছিলো বলেই অপার নান্দনিকতায় মোড়কে
ঢাকা ছিলো এতোকাল!
আমিও দূরে থাকতে চাই দূরে—বহু দূরে
কোন এক অজানা অদ্ভুত শহরে,
খুব একান্তে আনমনা, তুমি ছাড়া।
তুমি হাত বাড়াও আমার দিকে, সে অজানা নয় কিছু,
তোমার চোখ তোমার শরীর সে কথা বলে প্রতিনিয়ত
তোমার বাক্য পাথরে ঘষে-ঘষে আগুন জ্বালায় দেহে
সে আগুনে পুড়েই আমি চিতাভস্মের মতো উড়ে যাই।
আমিও তোমাকে ছুঁতে চাই প্রাণপণে—ভ্রমর যেমন
ফুলকে ছোঁয়, আকাশ যেমন মাটিকে স্পর্শ করে দিগন্তে,
নদী মোহনায় মেশে সাগরের।
আজ যতোই আদিমতার জয়গান গাই, সভ্যতার জিঞ্জির
ছিঁড়ে ফেলে এগিয়ে যাই মিলন মোহনায় খোঁজে, তাতে
লাভ নেই কোন, সিদ্ধিলাভ অসম্ভব পরাধীন এই জগতে;
আমরা আর আদিম মানুষ হতে পারলাম কই!
ঢাকা
কাব্যগ্রন্থ : এই বসন্তে তুমি ভালো থেকো